যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে অভ্যন্তরীণ উগ্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এক বিশেষ সতর্ক বার্তা জারি করা হয়েছে। এনিয়ে সর্বত্র উদ্বেগ উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের গত চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে যে কোন সময়ের চেয়ে এই শ্বেতাঙ্গবাদী উগ্রদের কর্মকাণ্ড মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে সবচেয়ে বেশি।
ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এ নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বুলেটিন প্রচার করেছে। বুলেটিনে পুরো সপ্তাহব্যাপী এই অভ্যন্তরীণ উগ্রদের হামলার বিষয়ে আশঙ্কা করে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এমন সতর্কতা জারি করা হয়ে থাকে।
মূলত নাইন ইলেভেন পরবর্তী সময়ে নতুন করে স্থাপিত হয় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়। এর অধীনে ন্যাশনাল টেররিষ্ট এ্যাডভাইজারি সিস্টেম (এনটিএএস) কোন রকমের গোপন গোয়েন্দা তথ্য পেলেই নাগরিকদের সব সময় সতর্ক করে দেয়।
বুধবার দেয়া সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, কিছু অভ্যন্তরীণ হিংস্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিগত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তথাকথিত জালিয়াতির মিথ্যা দাবিকে ঘিরে সংগঠিত হচ্ছে। এ গোষ্ঠী সংহিতার পথ অবলম্বন করে অগ্রসর হচ্ছে। এরা ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
চরমপন্থী এ গোষ্ঠী তাদের চরম উগ্রবাদী আদর্শ প্রতিষ্ঠায় মানুষজনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী অভিবাসনের কঠোর বিরোধী। তারা শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদে বিশ্বাসী। এরা ট্রাম্পের ক্রমাগত নির্বাচনে মিথ্যা জালিয়াতির দাবি বিশ্বাস করে এবং এসব উগ্রবাদী রক্ষণশীলরা এখনো বিশ্বাস করে ট্রাম্প নির্বাচনে হারেন নি। জালিয়াতি করে তার বিজয়কে চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছেন, এমন কথা তারা বিশ্বাস করে না।
সন্ত্রাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে এ সপ্তাহ নাশকতামূলক তৎপরতা বা যে কোন সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটাতে পারে আশঙ্কার কথা সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে কভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলা, গত জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল, পুলিশি তৎপরতা, নাগরিক আন্দোলন, বর্ণবিদ্বেষ, অভিবাসন বিরোধীতা- এসব নিয়ে একটি মহলের চরমপন্থী মনোভাব ও উগ্রবাদী তৎপরতার উপস্থিতি লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে বলে সতর্ক বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ট্রাম্পের এই সশস্ত্র সন্ত্রাসীরাই গত ৬ই জানুয়ারি মার্কিন আইনসভা ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায়। তারা ট্রাম্পের পক্ষে ইলেক্টোরাল ভোটের ফলাফল পাল্টে দিতে এই প্রয়াস চালিয়েছিল। উগ্র সন্ত্রাসীরাই নিজেদের উদ্দেশ্য সাধনে ব্যর্থ হয়। এই ঘটনায় ৫ জন নিহত, দুই পুলিশের আত্মহত্যাসহ বহুজনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।