শেরপুরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। বোরো ধান কাটা ও মাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষান ও কৃষানীরা। মাঠে মাঠে চলছে এখন বোরো ধান কাটাও মাড়াই কাজের ধূম । ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকদের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। জানা গেছে, গত আমন মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকদের অপুরনীয় ক্ষতি সাধিত হয়। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে,গত আমন মৌসুমে জেলাসদরসহ ৫টি উপজেলায় ৯২হাজার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়। এ লক্ষমাত্রা অর্জিত ও হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ অবিরাম বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের হিসাব মতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে জেলার কৃষকদের প্রায় ২৫ কোটি টাকা মূল্যের আমন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আর এ ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঝে প্রনোদনা হিসাবে বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বোরো আবাদে উৎসাহিত করা হয় কৃষকদের। ফলে আমনের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে বোরো চাষে কোমর বেধে মাঠে নামে কৃষকরা। তারা এখন বোরো ধান কাটা ও মাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে মাঠে চলছে এখন বোরো ধান কাটা ও মাড়াই কাজের ধুম। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ধানের ফলও হয়েছে ভাল। এতে তারা খুশি। চলতি বোরো মৌসুমে জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর জেলা সদরসহ ৫ টি উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করে ৯০ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। তন্মধ্যে শেরপর সদর উপজেলায় ২৪হাজার ৩৩৫ হেক্টর। শ্রীবরদীতে ২৬ হাজার ৮০৭ হেক্টর,ঝিনাইগাতীতে ২৩ হাজার ১৬২ হেক্টর। নালিতাবাড়িতে ২২ হাজার ৭৫১ হেক্টর। নকলায় ১৩ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে। সরকারের পক্ষ থেকে জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বোরো আবাদের লক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতিও গ্রহন করে। জানা গেছে, বোরো আবাদে সেচ সংকট দুরিকরনের লক্ষে ৪ টি রাবারড্যাম প্রস্তুত রয়েছে। রয়েছে ৩০৫ টি গভীর নলকূপ। তন্মধ্যে ডিজেল চালিত ৪১ টি,আর বিদ্যুৎ চালিত ২৬৪ টি। অগভীর নলকূপ রয়েছে ১৮ হাজার ৫৯৫টি, তন্মধ্যে ডিজেল চালিত ১২হাজার ৩৩৭ টি, বিদ্যুৎ চালিত ৬ হাজার ২৫৮ টি। এলএলপি ২৭৭টি , তন্মধ্যে ডিজেল চালিত ১৬৬টি, বিদ্যুৎ চালিত ১১১ টি। কৃষকদের সার,বীজও কীটনাশকের যোগান দিতে বিসিআইসি’র ডিলার রয়েছে ৫৯ জন। বিএডিসি’র১২৫ জন। খুচরা বিক্রেতা ৪৫৭ জন। বিএডিসি বীজ ডিলার ১৫৮ জন। কীট নাশক ডিলার পাইকারি ২৮ জন ও খুচরা ৯৯২ জন।
এ ছাড়া পাওয়ার টিলারসহ অন্যান্য পর্যাপ্ত কৃষি যন্ত্রপাতি ছিল। খাদ্যে উদ্বিত্ত্ব এ জেলায় কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের হিসাব মতে খাদ্য গ্রহনকারির সংখ্যা ২৫ লাখ। চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের প্রয়োজন ২ লাখ ৪৮ হাজার ২৬৪ মেট্রিকটন।স্হানীয় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বিত্ত্ব থাকে প্রায় ৩ লাখ মেট্রিকট। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর খামার বাড়ির উপ পরিচালক ড,মোহিদ কুমার দে বলেন, টেকসই ও লাভজনক ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিও ফলপ্রসু বিকেন্দ্রিকৃত এলাকা নির্ভর চাহিদা ভিত্তিক ও সমন্বিত কৃষি সেবা প্রদানের মাধ্যমে সকল কৃষকদের প্রযুক্তি ঞ্জান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করনে প্রশিক্ষনের পাশাপাশি ১৩৬জন উপসহকারি কৃষি অফিসার নিয়মিত পরামর্শ দেন কৃষকদের। তিনি বলেন প্রস্তুতি অনুযায়ী বোরো আবাদ হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস রয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারলে বোরো মৌসুমে আশানুরুপ ফলন ঘরে তুলতে পারবে কৃষকরা।