নানা কর্মকাণ্ডে জাতীয় সংসদের বিতর্কিত হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী। ক্যাসিনোকাণ্ড থেকে শুরু করে সরকারের শুদ্ধি অভিযান- সব জায়গায় নাম আসে এই হুইপের।
২০১৯ সালের ক্যাসিনো অভিযানের পর ওই বছরের ২৩ অক্টোবর মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ এনে এমপি সামশুল হক চৌধুরীসহ ২২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর চিঠি পাঠায় দুদক।
দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, সংশ্লিষ্টরা দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তারা যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
একই সঙ্গে ওই সময় জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে সামশুল হকসহ সংশ্লিষ্ট দুই ডজন এমপির ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) অনুরোধ জানায় দুদক।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে হুইপসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা জানিয়েছিল দুদক। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দুদকের পাঠানো ওই চিঠির বিষয়ে সংস্থাটির সাবেক সচিব দিলওয়ার বখত তখন গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে সামশুল হকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তবে এখনো দুদকের পক্ষ থেকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডাকা হয়নি।
এ বিষয়ে দুদকের পরিচালক (অনুসন্ধান) ও তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেন বলেন, তার (সামশুল) বিরুদ্ধে এখনো দুদকের তদন্ত ও অনুসন্ধান চলমান।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর দুই শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকা করে তাদের অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নামে দুদক। ইতোমধ্যে এই তালিকা থেকে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের বেশ কয়েকজন আলোচিত নেতাসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, সামশুল হক চৌধুরীর জীবনটাই জালিয়াতিতে ভরা। তার জালিয়াতির আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে বাবুর্চিকে জমির মালিক সাজিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে জমি আত্মসাৎ করা। সামশুল হকের জালিয়াতির ফলে জমি হারানো ওই পরিবার প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তার জালিয়াতিতে এমন অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন।