মহামারী করোনাভাইরাসের এই সময়ে অনেকেই একা একা স্বজনছাড়া দিন কাটাচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি অনেকেই আছেন তারা দিনের পর দিন স্বজনের দেখা পান না। এই কঠিন সময়ে মা-ছেলের একটি ছবি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, ছেলে শরীরের সঙ্গে গামছা দিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে রেখেছেন।
মোটরসাইকেলের পেছনে করোনায় আক্রান্ত মা বসে আছেন। সেই স্কুল শিক্ষিকা মাকে লকডাউনের সময় মোটরসাইকেলে করে শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তার ছেলে।
লকডাউনে মা-ছেলের এমন বিরল দৃশ্য শনিবার বিকেল ৩টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ গেট সংলগ্ন বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে স্থানীয়রা ধারণ করেছেন। এমনকি সেখানে চেকপোস্টে উপস্থিত থাকা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরা মোটরসাইকেলটি হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য সাহায্য করেছে।
করোনায় আক্রান্ত ওই রোগী হচ্ছেন, রেহেনা পারভীন (৫০)। তিনি ঝালকাঠীর নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবদুল হাকিম মোল্লার স্ত্রী। রেহেনাকে বহনকারী মোটরসাইকেলের চালক হচ্ছেন তারই ছেলে জিয়াউল হাসান টিটু।
জিয়াউল হাসান টিটু জানান, গত বুধবার তার মার করোনা শনাক্ত হলে নলছিটির সূর্যপাশা বাড়িতে বসেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শনিবার দুপুরে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে লকডাউনের মধ্যেই মায়ের জীবন বাঁচাতে মোটরসাইকেলে টিটু নিজের শরীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে হাসপাতে নিয়ে আসেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট তৌহিদ টুটুল বলেন, লকডাউনে বের হওয়ার কারণ জানতে চেকপোস্টে যথা নিয়মে তাদের থামানোর সংকেত দেওয়া হয়। তবে কাছাকাছি এলে দেখা যায় মোটরসাইকেলচালক তার শরীরের সঙ্গে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার গামছা দিয়ে বেঁধে নিয়েছেন। আর পেছনে তাকে ধরে যে নারী বসে আছেন তার মুখে অক্সিজেন মাস্ক।
সিলিন্ডার থেকে অক্সিজেন মাস্ক দিয়ে ওই নারী যথারীতি অক্সিজেন গ্রহণ করছেন। এভাবেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।