বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। কুষ্টিয়ায় পরিচালিত এক গোপন ও সুপরিকল্পিত বিশেষ অভিযানে ।
জনিরুল ইসলাম কুষ্টিয়া দৌলতপুর
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত এক গোপন ও সুপরিকল্পিত বিশেষ অভিযানে দেশের শীর্ষ
তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী এবং তার প্রধান সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার একটি নির্জন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে অংশ নেয় সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ কমান্ডো ইউনিট। অভিযানের সময় কোনো ধরনের গুলিবিনিময়ের ঘটনা না ঘটলেও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে বাহিনী। আটক দুজন দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তবর্তী এলাকায় গোপনে অবস্থান করে আসছিলেন। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী একই দিন সকালে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় আরও একটি অভিযান পরিচালনা করে। সেখানে সুব্রত বাইনের আরও দুই সহযোগী শ্যুটার আরাফাত ও শরীফ কে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে উদ্ধার হয় ৫টি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন। এসব অস্ত্র ও যোগাযোগ যন্ত্রপাতি দিয়ে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে ধারণা করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সেনাবাহিনীর একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, “এই চক্রটি দেশের ভেতরে নতুন করে সন্ত্রাসী তৎপরতা শুরু করার জন্য সংগঠিত হচ্ছিল। তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করছিল গোয়েন্দা ইউনিট। যথাযথ সময়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।” সুব্রত বাইন: এক দশকের আতঙ্ক সুব্রত বাইন একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদক পাচার মামলায় অভিযুক্ত। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি দেশের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী তালিকায় রয়েছেন। তিনি একসময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ সীমান্তে সক্রিয় ছিল বলে জানা যায়। পরবর্তী সময়ে ছদ্মনামে দেশে ফিরে আসে এবং গোপনে সংগঠিত হচ্ছিলেন। অভিযান চালাতে হয় সেনাবাহিনীকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামানো থেকে বোঝা যায় যে এই সন্ত্রাসী চক্রটি কতটা ভয়ঙ্কর ও সুসংগঠিত ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে সেনাবাহিনী এই অভিযানটি সফলভাবে সম্পন্ন করে। জাতীয় নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অভিযানের পর নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা একে “জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় সাফল্য” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই ধরণের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম দেশের জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। সেনাবাহিনীর ঘোষণাঃ অভিযান চলবে সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। যেকোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা দমন করতে সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।” সুব্রত বাইন ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার এখন তদন্ত সংস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হয়ে দাঁড়াবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বর্তমানে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।