বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। নতুন সন্তান ও স্ত্রীকে সময় দিচ্ছেন তিনি। অপরদিকে বাংলাদেশ দল নিউজিল্যান্ডে। সামনে আবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট। সব মিলিয়ে জাতীয় দলের ব্যস্ত সময়। কিন্তু দলের ব্যস্ততায় নেই সাকিব। তার চিন্তা আইপিএল। নিজের দল যখন লঙ্কানদের বিপক্ষে লড়বে সাকিব খেলবেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে!
কেন সাকিব নিজের দল থাকতে পরবাসে যাবেন খেলতে? ভক্ত-সমর্থক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বিষয়টি নিয়ে ছিলেন বেশ চিন্তায়। কেউ আবার দেশের পক্ষে না থেকে বিদেশি দলে খেলার ইচ্ছা পোষণ করায় দিয়েছেন দুয়োধ্বনি। অবাক হয়েছেন স্বয়ং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রধান নাজমুল হাসান পাপন।
সব কিছুর উত্তর দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে আজ ভোরে নিজের জায়গা পরিস্কার করেন সাকিব। জানিয়েছেন, বিসিবিকে দেওয়া চিঠিতে কোথাও উল্লেখ করেননি যে তিনি টেস্ট খেলতে চান না।
লাইভে যা বলেছেন সাকিব; তার উল্লেখযোগ্য অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো- –
‘শুধু কথা হচ্ছে আমি টেস্ট খেলতে চাই না। আমি নিশ্চিত বিসিবিকে আমি যখন চিঠি দিয়েছি, যারাই বলছে যে আমি টেস্ট খেলতে চাই না বা টেস্ট খেলব না, তারা চিঠিটা পড়েনি। এটা হচ্ছে একদম বড় কথা। আমি আমার চিঠিতে কোথাও উল্লেখ করিনি যে আমি টেস্ট খেলতে চাই না। আমি শুধু উল্লেখ করেছি, আমি বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য এই সময়টাতে আইপিএল খেলতে চাই। শুধু এইটুকুই বলেছি।
আকরাম ভাই (বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান আকরাম খান) বার বার বলেছে, আমি খেলতে চাই না। আমার ধারণা উনি চিঠিটি পড়েনি। আমি পাপন ভাইকে (বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান) ধন্যবাদ দিতে চাই, উনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খেলোয়াড়দের এই স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। বোর্ড কিংবা বোর্ড প্রধান যদি কোনো ক্রিকেটারকে এভাবে সাহায্য করে, তাহলে ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। পরে ক্রিকেটারদের জাতীয় দলের প্রতি দায়বদ্ধতাও বেড়ে যায়। সেদিক থেকে পাপন ভাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই।
সময় মতো সিরিজ হলে এই প্রশ্নই উঠত না। করোনা মহামারীর কারণে সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। ম্যাচগুলো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। আমাদের আছেই এই দুটি ম্যাচ। আমরা আছিই পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। এমন না যে এই দুইটা ম্যাচ জিতলে আমরা ফাইনাল খেলব। খুব বেশি একটা কিছু যে হবে আমার মনে হয় না। এই বছরের শেষেই ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে আমাদের অনেক কিছু অর্জনের সুযোগ আছে। এই দুইটা টেস্টে সেই সুযোগ নেই। অবশ্যই দল হিসেবে যদি দুইটা টেস্ট জিতি তাহলে অনেক ভালো। কিন্তু বড় চিত্রটা দেখেন, আমি নিজেকে বড় কিছু অর্জনের সুযোগ আছে আমাদের দেশের, সেটাকে ভালো সুযোগ মনে করি।
আমরা বেশ কিছু ক্রিকেটার অনেকদিন ধরে খেলছি। এটা একটা সুযোগ হতে পারে নতুনদের দেখার। আমি বেশ কিছুদিন ধরেই টেস্টের বাইরে ছিলাম। একটা টেস্ট খেলেছিলাম, সেখানে গিয়েই চোটে পড়েছিলাম। যেই সর্বশেষ সাত-আটটা টেস্ট বাংলাদেশ খেলেছে, আমাকে ছাড়াই খেলেছে। আমার মনে হয় যে, খুব একটা ক্ষতি হবে না। বরং দুই-একজন ক্রিকেটার তৈরি হতে পারে। নতুনদের দেখার সুযোগ হতে পারে।
আমার কাছে মনে হয়, কখনও যদি বিসিবির সভাপতির মত পদে যেতে পারি তাহলে আমি যে কাজ করব ওটা বাংলাদেশের আর কেউ করতে পারবে না। অবশ্যই, ক্রিকেটে থাকলে আর বিসিবি সভাপতি হওয়ার সুযোগ আসলে আমি হতে চাইব। আমি জানি, আমি বিসিবির ইতিহাসের সেরা সভাপতি হবো। খুব ভালোভাবে বিশ্বাস করি, আমার পক্ষে এটা সম্ভব।’