কামাল হোসেন থেকে হয়েছেন আরমান হোসেন। পাল্টেছেন বাবা-মাসহ স্থায়ী ঠিকানাও। চাচার ক্ষমতাবলে নিয়োগ পেয়েছেন কারারক্ষী হিসেবে। সাত বছরের বেশি সময় চাকরির মেয়াদ হলেও এতো দিন সবই ছিলো অন্তরালে।
এই আরমান হোসেনের পিতা সিদ্দিকুর রহমান। ঠিকানা শঙ্করপুর বাসস্ট্যান্ড, চাচড়া, যশোর। কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে ৪২৭১০ নং কারারক্ষী সে। তার ক্ষমতাবান চাচা সাবেক কারারক্ষী নোয়াব আলীর হাত ধরে ২০১৩ সালে নিয়োগ পান। খুলনার অধীনে প্রেষণে বাগেরহাট ও বর্তমান বদলি হয়ে কুষ্টিয়া কারাগারে কর্মরত তিনি।
আরমানের আসল নাম কামাল হোসেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে মেলে, আরমান হোসেনের বাড়ি যশোর নয়; ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার উজ্জলপুর গ্রামে। কিন্তু, ভোটার আইডি কার্ডের সাথে মেলে না বর্তমান আরমান নাম ধারির চেহারা। আসল আরমান ও তার পরিবারের কাছে জানা গেলো প্রকৃত ঘটনা।
তাহলে কারারক্ষী আরমান কে? প্রকৃত নাম কামাল হোসেন, পিতা মতিয়ার রহমান, মায়ের নাম আফিয়া খাতুন। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা- ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার, নাটিমা ইউনিয়নের উজ্জলপুর গ্রাম। পঞ্চম শ্রেণি পাশ কামালের ভোটার নম্বর ৪৪০৯৮৬২৩৬৪৬৪। ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় ক্রমিক নম্বর ২৫৩।
১৭ বছরের এক ছেলে ও ১৩ বছরের এ মেয়ের জনক এই আরমান ওরুফে কামাল হোসেন কারারক্ষী হিসেবে কর্মরত সাত বছরের বেশী। অথচ কারা বিধি অনুযায়ী, কারারক্ষী পদে নিয়োগের শর্ত হলো আবেদনকারীকে অবিবাহিত ও নূন্যতম এসএসসি পাশ হতে হবে। যার কোন শর্তই মানেনি কামাল। পুলিশ ভেরিফিকেশনেও ধরা পড়েনি বিষয়গুলো।
অনুসন্ধান ও বিভিন্ন সূত্র থেকে মিলেছে এর পেছনের মুল কারিগর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সাবেক কারারক্ষী, নোয়াব আলী। যিনি থাকেন যশোর শহরের বারান্দিপাড়ায়। আলিশান বাড়ির মালিক নোয়াব আলীরও আসল নাম গোলাম রহমান। বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার উজ্জলপুর গ্রামে। এই গোলামই কারারক্ষী আরমান ওরুফে কামাল হোসেনের সম্পর্কে চাচা হন। যিনি কারারক্ষী পদে অবৈধভাবে নিয়োগ চক্রের একজন অন্যতম হোতা বলে পরিচিত।
যদিও নোয়াব ওরুফে গোলামের দাবি আরমান ওরুফে কামাল এতিম। তবে ভোটার কার্ডে থাকা কামালের বাবা-মার বক্তব্যে মেলে না সে তথ্য।