গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পেতে প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টার মামলায় উচ্চ আদালতের রায় আজ।
এরপর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ঠিক করে দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির উল্লাহ।
এছাড়া সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান খান শাহিন, মোহাম্মদ শাহিন আহমেদ, মো. সাফায়েত জামিল, মো. আশিকুজ্জামান বাবু, সাদিয়া সুলতানা রত্নাও শুনানিতে অংশ নেন।
আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান, মোহাম্মদ আহসান, মো. নাসিরউদ্দিন।
২০১৮ সালের ২ এপ্রিল এ মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডের রায়ের অনুমোদন) ও আপিলের উপর শুনানি শুরু হয়েছিল।
হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আবদুল হান্নান এই মামলায় মূল আসামি ছিলেন। অন্য মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়।
শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
এ ঘটনায় কোটালীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন মামলা দায়ের করেন। ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
পরবর্তীকালে ২০০৯ সালের ২৯ জুন আরও নয়জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এরপর ২০১০ সালে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা-২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়।
২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ট্রাইব্যুনালের বিচারক মমতাজ বেগম রায়ে ১০ জঙ্গির প্রাণদণ্ড দেন।
গুলি করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন বিচারক। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ওয়াশিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই এবং মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
এছাড়া মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
আসামি আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেওয়া হয়।